শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
মাথা গোঁজার আর জায়গা রইল না বিনিয়োগকারীদের৷ শেয়ার বাজারের পাশাপাশি ঋণপত্রের বাজারেও ধস নামল মঙ্গলবার৷ মুম্বই শেয়ার বাজারের প্রধান মূল্যসূচক সেনসেক্স এ দিন গড়িয়ে গেল ১৮৩ পয়েন্ট (০.৯১ শতাংশ)৷ ওদিকে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রের দাম পড়ে গেল প্রায় ৬ শতাংশ- ১০০ টাকা দামের ঋণপত্র এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৪ টাকায়! শেয়ার ও ঋণপত্র দুই বাজারেই এ দিন ধস নামার পেছনে কারণ একটাই- ডলারের সাপেক্ষে টাকার দরে পতন আটকাতে সোমবার রাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তড়িঘড়ি কয়েকটি পদক্ষেপ করেছে৷ তড়িঘড়ি কেননা ৩০ জুলাই ঋণনীতি ঘোষণার কথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের৷ তার আগেই এই পদক্ষেপ, যা কিনা বিশেষজ্ঞরা রেপো রেট বা সুদের হার বাড়ানোর মতোই মনে করছেন , বিনিয়োগকারীদের হতচকিত করে দিয়েছে৷ তাঁরা ভেবেছেন, সুদের হার কমানোর পরিবর্তে এবার থেকে হয়ত সুদের হার বাড়ানোর পথেই হাঁটবে৷ আর , তা হলে তো দেশে শিল্প বিনিয়োগ, কলকারখানায় উত্পাদন বৃদ্ধির হার, চাকরির সুযোগ সবই আরও কমে যাবে৷ সেই ভয়েই তড়িঘড়ি লগ্নি বিক্রি করা, না হলে এর পর যে আর দামই পাওয়া যাবে না৷
২২ মে এবং ১৯ জুন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান বেন বার্নানকির মন্তব্যের (প্রতি মাসে ৮,৫০০ কোটি ডলার মূল্যের ঋণপত্র কেনার প্রকল্প শীঘ্র গুটিয়ে আনা হতে পারে) পর বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা তাড়াহুড়ো করে দেশে বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বেচে ডলার কিনতে শুরু করে৷ মঙ্গলবারও ঠিক তেমনি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘোষণায় ভয় পেয়ে বিনিয়োগকারীরা দেশের শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে তাদের লগ্নি বেচতে শুরু করে৷ ধস নামে বাজারে৷ বিশেষ করে ঋণপত্রের বাজারে একদিনে বন্ডের দামে এতটা পতন সাধারণত দেখা যায় না৷
কিন্ত্ত, কী ব্যবস্থার কথা বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যার জেরে এই ভীতি ? প্রথমেই পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, বিদেশি মুদ্রায় টাকার বিনিময় দরে অস্থিরতা কমাতেই এই পদক্ষেপ৷ অর্থাত্, টাকার বিনিময় দর স্থিতিশীল হলেই ঘোষিত পদক্ষেপগুলি প্রত্যাহার করে নেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ অন্য কথায়, এই ব্যবস্থাগুলি সাময়িক, দীর্ঘস্থায়ী নয়৷ এবার চোখ ফেরানো যাক সোমবার ঘোষিত পদক্ষেপগুলির দিকে৷ ওই দিন যে ক'টি ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার সার কথা: ১) মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে চায়, তা হলে এখন তাদের ৮ .২৫ শতাংশ হারের বদলে ১০.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে৷ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের মোট আমানতের ৪ শতাংশ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে জমা রাখতে হয়৷ প্রতি দু'সপ্তাহ অন্তর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে তাদের মোট আমানতের হিসাব দিতে হয় এবং সেইমত নগদ জমাও রাখতে হয়৷ যদি কোনও কারণে ওই নগদ জমার অনুপাত কমে যায় , সেই ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে টাকা ধার করতে হয়৷ তারা ওই টাকা মানি মার্কেট অন্য কোনও ব্যাঙ্কের কাছ থেকে অথবা সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ধার করতে পারে৷ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির রোজকার নগদের প্রয়োজন মেটাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রতিদিন 'রেপো রেট 'এর ভিত্তিতে একদিন থেকে তিনদিনের মেয়াদে টাকা ধার দিয়ে থাকে৷ ওই টাকা দেওয়া হয় নিলাম করে৷ কোনও ব্যাঙ্কের অতিরিক্ত নগদের জরুরি প্রয়োজন হলে তারা মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটিতে বেশি সুদে টাকা ধার করতে পারে৷ মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির সুদের হার রেপো রেটের চেয়ে এতদিন ১ শতাংশ বেশি , অর্থাত্ ৮ .২৫ শতাংশ ছিল৷ ২) রেপো রেটের (৭ .২৫ শতাংশ সুদের হারে ) মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে প্রতিদিন মোট কত টাকা ধার দেওয়া হবে তার সীমাও বেঁধে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ বুধবার থেকে ওই পরিমাণ হবে ৭৫ ,০০০ টাকা৷ অর্থাত্, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রেপো রেটে মোট ৭৫ ,০০০ টাকাই ধার করতে পারবে৷ কোন ব্যাঙ্ক কত টাকা ধার চেয়ে ডাক দেবে তার ভিত্তিতেই ওই ৭৫ ,০০০ টাকা বণ্টন করা হবে৷ জুলাই মাসের শুরু থেকে মঙ্গলবার অবধি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে রেপো রেটে কত টাকা ধার করেছে তার পরিসংখ্যান টেবিলে দেওয়া হল৷ ওই পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ৮ জুলাই , যেদিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর সবচেয়ে কমে ৬১ .২১ হয়েছিল , থেকে রেপো রেটে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির টাকা ধার নেওয়া হঠাত্ অনেকটা বেড়ে যায়৷ মঙ্গলবার তো ব্যাঙ্কগুলির ওই ধার নেওয়ার চাহিদা অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছয়৷ কেননা , বুধবার থেকে রেপো রেটে ৭৫ ,০০০ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না৷ কিন্ত্ত , চলতি অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত ব্যাঙ্কঋণের চাহিদা তো বিশেষ বাড়েইনি ? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে , ১৪ জুন অবধি ব্যাঙ্কগুলিতে আমানত বেড়েছে ১৩ .৬১ শতাংশ (গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় ) এবং ঋণ দেওয়া বেড়েছে ১৩ .৬৫ শতাংশ৷ তা হলে , গত দু'মাস ধরে ব্যাঙ্কগুলির এতো নগদের প্রয়োজন পড়ল কেন ? কেনই বা রেপো রেটে ব্যাঙ্কগুলি প্রতিদিন মোট কত টাকা ধার করতে পারবে তার উর্ধ্বসীমা বেঁধে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ? তবে কি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৭ .২৫ শতাংশ সুদের হারে টাকা ধার নিয়ে ওই টাকায় ডলারের ফাটকা কারবার করছিল ? ১০ জুলাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল তারা যেন ডলার -টাকার দর নিয়ে কোনও রকম ফাটকা কারবারে না জড়ায়৷ সোমবার মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির সুদের হার বাড়ানো এবং রেপো রেটে টাকা ধার দেওয়ার উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া থেকে পরিষ্কার , কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সন্দেহ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সস্তায় টাকা ধার নিয়ে ওই টাকা ডলারের ফাটকা কারবারে ব্যবহার করছে - হয় এক্সচেঞ্জগুলিতে ব্যাঙ্কগুলি নিজেরাই বিদেশি মুদ্রার ফিউচারস বা অপশনস -এ ফাটকা খেলছে , নয় বিনিয়োগকারীদের টাকা ধার দিচ্ছে ওই ফাটকা খেলার জন্য৷ টাকার জোগান কমিয়ে দিলে এবং সুদের হার বাড়িয়ে দিলে , ডলার -টাকা নিয়ে ফাটকা কমবে৷ তাই, সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই পদক্ষেপগুলি করেছে৷ করবে নাই বা কেন ? টাকার দরে পতন আটকাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে দেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় থেকে ১ ,২৫০ কোটি ডলার ইতিমধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছে অথচ টাকার পতন থামানো যায়নি৷ ৷
মাথা গোঁজার আর জায়গা রইল না বিনিয়োগকারীদের৷ শেয়ার বাজারের পাশাপাশি ঋণপত্রের বাজারেও ধস নামল মঙ্গলবার৷ মুম্বই শেয়ার বাজারের প্রধান মূল্যসূচক সেনসেক্স এ দিন গড়িয়ে গেল ১৮৩ পয়েন্ট (০.৯১ শতাংশ)৷ ওদিকে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রের দাম পড়ে গেল প্রায় ৬ শতাংশ- ১০০ টাকা দামের ঋণপত্র এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৪ টাকায়! শেয়ার ও ঋণপত্র দুই বাজারেই এ দিন ধস নামার পেছনে কারণ একটাই- ডলারের সাপেক্ষে টাকার দরে পতন আটকাতে সোমবার রাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তড়িঘড়ি কয়েকটি পদক্ষেপ করেছে৷ তড়িঘড়ি কেননা ৩০ জুলাই ঋণনীতি ঘোষণার কথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের৷ তার আগেই এই পদক্ষেপ, যা কিনা বিশেষজ্ঞরা রেপো রেট বা সুদের হার বাড়ানোর মতোই মনে করছেন , বিনিয়োগকারীদের হতচকিত করে দিয়েছে৷ তাঁরা ভেবেছেন, সুদের হার কমানোর পরিবর্তে এবার থেকে হয়ত সুদের হার বাড়ানোর পথেই হাঁটবে৷ আর , তা হলে তো দেশে শিল্প বিনিয়োগ, কলকারখানায় উত্পাদন বৃদ্ধির হার, চাকরির সুযোগ সবই আরও কমে যাবে৷ সেই ভয়েই তড়িঘড়ি লগ্নি বিক্রি করা, না হলে এর পর যে আর দামই পাওয়া যাবে না৷
২২ মে এবং ১৯ জুন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান বেন বার্নানকির মন্তব্যের (প্রতি মাসে ৮,৫০০ কোটি ডলার মূল্যের ঋণপত্র কেনার প্রকল্প শীঘ্র গুটিয়ে আনা হতে পারে) পর বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা তাড়াহুড়ো করে দেশে বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বেচে ডলার কিনতে শুরু করে৷ মঙ্গলবারও ঠিক তেমনি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘোষণায় ভয় পেয়ে বিনিয়োগকারীরা দেশের শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে তাদের লগ্নি বেচতে শুরু করে৷ ধস নামে বাজারে৷ বিশেষ করে ঋণপত্রের বাজারে একদিনে বন্ডের দামে এতটা পতন সাধারণত দেখা যায় না৷
কিন্ত্ত, কী ব্যবস্থার কথা বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যার জেরে এই ভীতি ? প্রথমেই পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, বিদেশি মুদ্রায় টাকার বিনিময় দরে অস্থিরতা কমাতেই এই পদক্ষেপ৷ অর্থাত্, টাকার বিনিময় দর স্থিতিশীল হলেই ঘোষিত পদক্ষেপগুলি প্রত্যাহার করে নেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ অন্য কথায়, এই ব্যবস্থাগুলি সাময়িক, দীর্ঘস্থায়ী নয়৷ এবার চোখ ফেরানো যাক সোমবার ঘোষিত পদক্ষেপগুলির দিকে৷ ওই দিন যে ক'টি ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার সার কথা: ১) মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে চায়, তা হলে এখন তাদের ৮ .২৫ শতাংশ হারের বদলে ১০.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে৷ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের মোট আমানতের ৪ শতাংশ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে জমা রাখতে হয়৷ প্রতি দু'সপ্তাহ অন্তর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে তাদের মোট আমানতের হিসাব দিতে হয় এবং সেইমত নগদ জমাও রাখতে হয়৷ যদি কোনও কারণে ওই নগদ জমার অনুপাত কমে যায় , সেই ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে টাকা ধার করতে হয়৷ তারা ওই টাকা মানি মার্কেট অন্য কোনও ব্যাঙ্কের কাছ থেকে অথবা সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ধার করতে পারে৷ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির রোজকার নগদের প্রয়োজন মেটাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রতিদিন 'রেপো রেট 'এর ভিত্তিতে একদিন থেকে তিনদিনের মেয়াদে টাকা ধার দিয়ে থাকে৷ ওই টাকা দেওয়া হয় নিলাম করে৷ কোনও ব্যাঙ্কের অতিরিক্ত নগদের জরুরি প্রয়োজন হলে তারা মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটিতে বেশি সুদে টাকা ধার করতে পারে৷ মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির সুদের হার রেপো রেটের চেয়ে এতদিন ১ শতাংশ বেশি , অর্থাত্ ৮ .২৫ শতাংশ ছিল৷ ২) রেপো রেটের (৭ .২৫ শতাংশ সুদের হারে ) মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে প্রতিদিন মোট কত টাকা ধার দেওয়া হবে তার সীমাও বেঁধে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷ বুধবার থেকে ওই পরিমাণ হবে ৭৫ ,০০০ টাকা৷ অর্থাত্, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রেপো রেটে মোট ৭৫ ,০০০ টাকাই ধার করতে পারবে৷ কোন ব্যাঙ্ক কত টাকা ধার চেয়ে ডাক দেবে তার ভিত্তিতেই ওই ৭৫ ,০০০ টাকা বণ্টন করা হবে৷ জুলাই মাসের শুরু থেকে মঙ্গলবার অবধি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে রেপো রেটে কত টাকা ধার করেছে তার পরিসংখ্যান টেবিলে দেওয়া হল৷ ওই পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ৮ জুলাই , যেদিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর সবচেয়ে কমে ৬১ .২১ হয়েছিল , থেকে রেপো রেটে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির টাকা ধার নেওয়া হঠাত্ অনেকটা বেড়ে যায়৷ মঙ্গলবার তো ব্যাঙ্কগুলির ওই ধার নেওয়ার চাহিদা অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছয়৷ কেননা , বুধবার থেকে রেপো রেটে ৭৫ ,০০০ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না৷ কিন্ত্ত , চলতি অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত ব্যাঙ্কঋণের চাহিদা তো বিশেষ বাড়েইনি ? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে , ১৪ জুন অবধি ব্যাঙ্কগুলিতে আমানত বেড়েছে ১৩ .৬১ শতাংশ (গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় ) এবং ঋণ দেওয়া বেড়েছে ১৩ .৬৫ শতাংশ৷ তা হলে , গত দু'মাস ধরে ব্যাঙ্কগুলির এতো নগদের প্রয়োজন পড়ল কেন ? কেনই বা রেপো রেটে ব্যাঙ্কগুলি প্রতিদিন মোট কত টাকা ধার করতে পারবে তার উর্ধ্বসীমা বেঁধে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ? তবে কি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৭ .২৫ শতাংশ সুদের হারে টাকা ধার নিয়ে ওই টাকায় ডলারের ফাটকা কারবার করছিল ? ১০ জুলাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল তারা যেন ডলার -টাকার দর নিয়ে কোনও রকম ফাটকা কারবারে না জড়ায়৷ সোমবার মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফেসিলিটির সুদের হার বাড়ানো এবং রেপো রেটে টাকা ধার দেওয়ার উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া থেকে পরিষ্কার , কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সন্দেহ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সস্তায় টাকা ধার নিয়ে ওই টাকা ডলারের ফাটকা কারবারে ব্যবহার করছে - হয় এক্সচেঞ্জগুলিতে ব্যাঙ্কগুলি নিজেরাই বিদেশি মুদ্রার ফিউচারস বা অপশনস -এ ফাটকা খেলছে , নয় বিনিয়োগকারীদের টাকা ধার দিচ্ছে ওই ফাটকা খেলার জন্য৷ টাকার জোগান কমিয়ে দিলে এবং সুদের হার বাড়িয়ে দিলে , ডলার -টাকা নিয়ে ফাটকা কমবে৷ তাই, সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই পদক্ষেপগুলি করেছে৷ করবে নাই বা কেন ? টাকার দরে পতন আটকাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে দেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় থেকে ১ ,২৫০ কোটি ডলার ইতিমধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছে অথচ টাকার পতন থামানো যায়নি৷ ৷
No comments:
Post a Comment