Monday, August 26, 2013

রেলের জমি দখল করে আগরপাড়ায় বেআইনি বাজার

রেলের জমি দখল করে আগরপাড়ায় বেআইনি বাজার
পল্লব ভট্টাচার্য

আগরপাড়া: রেলের জমি দখল করে দিব্যি চলছে আগরপাড়ার রেলবাজার৷ জমছে অভিযোগের পাহাড়৷ সন্ধে হতে না হতেই আগরপাড়া স্টেশনের দুই-তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে বসে যায় বাজার৷ ছোট বড় মিলিয়ে শ'দুয়েক বেআইনি দোকানের স্থায়ী আস্তানা স্টেশন চত্বরে৷ রেল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করছেন বাজার তুলে দিতে৷ কিন্ত্ত এক পা এগিয়েও দু'পা পিছিয়ে আসতে হচ্ছে তাঁদের৷ অভিযোগ, আরপিএফ এবং জিআরপি-র মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই থমকে যাচ্ছে বাজার উচ্ছেদের কাজ৷

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর চল্লিশেক আগে বাংলাদেশ থেকে আসা ছিন্নমূল উদ্বাস্ত্তরা বসতি গড়ে তুলেছিলেন এই স্টেশন চত্বরের আশপাশে এবং তাঁদের জীবিকা নির্বাহের তাগিদেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বাজার৷ এখন সেটাই বিপুলাকার ধারণ করেছে৷ ট্রেন থেকে নেমে হাতের কাছেই নিত্যপ্রয়োজনীয় আনাজ মশলা মাছ পেয়ে যান নিত্যযাত্রীরা৷ তাই বেআইনি জেনেও সকলেই মুখ বুজে থাকেন৷ সে রকমই এক যাত্রী মনোজ চক্রবর্তী জানালেন, 'শুনেছি বাজারের জমি জবরদখলি৷ রেল চাইছে তুলে দিতে৷ আমরাও বুঝি, এর ফলে সত্যিই ট্রেন চলাচলে খুব অসুবিধে হয়৷ মাঝে মধ্যেই থ্রু ট্রেন দাঁড় করিয়ে দিতে হয়৷ দুর্ঘটনার ভয়ে লোকালও আস্তে চালাতে হয়৷ রেললাইনের ধারে বাজার করার সময় মানুষ এত অন্যমনস্ক থাকেন যে ট্রেনের হুইসলও তাঁদের কানে পৌঁছয় না৷ বাজারের চড়া আলোয় ঢাকা পড়ে যায় ট্রেনের আলো৷ ফলে যে কোনও সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে৷ তবু অধিকাংশ স্থানীয় মানুষ এই বাজারেই রোজকার বাজার সারেন৷'

কিন্ত্ত সব জেনেশুনেও রেলের আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কেন নিচ্ছেন না? স্টেশন সুপারভাইজার নারায়ণ শা-এর কথায়, 'সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারকে বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছি৷ কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে দেখেও গিয়েছেন৷ কিন্ত্ত উচ্ছেদের তারিখ নিয়ে আরপিএফ এবং জিআরপি একমত হতে পারছে না বলেই ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না৷' রেল সূত্রে খবর, শিয়ালদহ মেন শাখার একমাত্র বেআইনি বাজার হল আগরপাড়া রেলবাজার৷ এই এলাকাকে দখলমুক্ত করতে ইতিমধ্যেই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন রেলের শীর্ষকর্তারা৷ কিন্ত্ত এ ধরণের উচ্ছেদ অভিযানে সবচেয়ে গুরপুত্বপূর্ণ ভূমিকা জিআরপি-র, যেহেতু রেললাইনের দশ ফুটের মধ্যে যে কোনও বেআইনি নির্মাণ তুলে দেওয়ার অধিকার একমাত্র জিআরপি-রই রয়েছে৷ আর দশ ফুটের পরে উচ্ছেদের কাজ তদারক করবেন ইন্সপেক্টর অফ ওয়ার্কস, যাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আরপিএফের৷ কাজেই এই রেলবাজার তুলতে হলে আরপিএফ এবং জিআরপি-কে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে, যা সম্ভব হচ্ছে না বলেই রমরমিয়ে চলছে বাজার৷ রেলবাজারের ব্যবসায়ীরা এখনও এ নিয়ে কোনও আন্দোলনে না নামলেও তাঁদের দাবি, 'রেল পুনর্বাসন দিয়ে উচ্ছেদ করুক৷ জীবিকার অধিকার ধ্বংস করে নয়৷'

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Census 2010

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors