Friday, February 8, 2013

বৃদ্ধির হার দশকের সর্বনিম্ন, নজরদারি বাড়াচ্ছে অর্থমন্ত্রক

বৃদ্ধির হার দশকের সর্বনিম্ন, নজরদারি বাড়াচ্ছে অর্থমন্ত্রক
বৃদ্ধির হার দশকের সর্বনিম্ন, নজরদারি বাড়াচ্ছে অর্থমন্ত্রক
নয়াদিল্লি: যতটা ভাবা হয়েছিল বাস্তব পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেকটাই খারাপ৷ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান সংস্থার (সেন্ট্রাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অর্গানাইজেশন) অনুমান, এ বছর দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে, যা গত ১০ বছরে সবচেয়ে কম৷

বৃহস্পতিবার ওই সংস্থা জানিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৪.৮ শতাংশে ঠেকবে৷ জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে এই হার ছিল ৫.৩ শতাংশ৷ আর, প্রথম ত্রৈমাসিকে ৫.৫ শতাংশ৷ সিএসও-র পূর্বাভাষ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমানের (৫.৫ শতাংশ) তুলনায় অনেক কম৷

অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমে আসার অর্থ কম কর্মসংস্থান, কম আয়, সরকারের কম রাজস্ব আদায়৷ এর ওপর, খুচরো পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি যদি ১০ শতাংশের কাছাকাছি থাকে তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়বে৷২০০২-০৩ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ৷ তার পর থেকেই, ভারতের অভ্যন্তরীন উত্পাদন ৬ শতাংশের বেশি হারে বাড়ছে৷ সিএসও-র হিসাব অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে কৃষি, শিল্প ও পরিষেবা সব ক্ষেত্রেই বৃদ্ধির হার কমেছে৷ বৃদ্ধির হার কম হলে বিনিয়োগও কম হবে৷ ফলে, সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান এবং আয় দু'টোই কমবে৷ জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধি এতটা কমে গেলে, সংকটে পড়বেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ এ মাসের শেষেই তিনি পেশ করবেন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট৷ তখন তিনি মান রাখবেন না কূল রাখবেন?

অর্থনৈতিক বৃদ্ধি কম হলে, সরকারের রাজস্ব আদায়ও কম হবে৷ সে ক্ষেত্রে চিদম্বরমের পক্ষে আর্থিক ঘাটতি ৫.৩ শতাংশে সীমিত রাখা দূরূহ হবে৷ শুধু তাই নয়, বাজেটে বেশি কর ছাড় দেওয়াও তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷ কারণ, চাইলেই তিনি ঢালাও ব্যয় সংকোচ করতে পারবেন না৷ অথচ, আর্থিক ঘাটতি কমিয়ে আনার প্রবল চাপ থাকবে তাঁর উপর৷

তাই, সিএসও-র এই পূর্বাভাষে সবচেয়ে হতাশ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷ এক বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, '২০১২-১৩ অর্থবর্ষের জন্য সিএসও ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির যে পূর্বাভাষ দিয়েছে তা অত্যন্ত হতাশাজনক৷ এমনটা আশা করা যায়নি৷ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে সরকার সব রকম চেষ্টা করবে৷ আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি৷'

তবে, মন্ত্রকের আশা চূড়ান্ত পরিসংখ্যান অনেকটাই ভালো হবে কেননা নভেম্বরের পর থেকেই বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকে উন্নতি দেখা গেছে৷ সিএসও-র পরিসংখ্যানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও বেশ বিচলিত৷ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে সুদের হার কমানোর আর্জি জানিয়ে আসা হচ্ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাছে৷ সুদের হার কম হলে, বিনিয়োগ এবং ভোগব্যয় বাড়বে, তার ফলে অর্থনীতির বৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত হবে এই যুক্তিতে৷ কিন্ত্ত, মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ন'মাস সুদের হারে কোনও পরিবর্তন করেনি৷

২৯ জানুয়ারি ঋণনীতি ঘোষণার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য স্বীকার করে এখন অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত৷ বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গর্ভনর ডি সুব্বারাও বলেন, 'ঋণনীতির পরবর্তী পর্যালোচনার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সিএসও-র এদিনের দেওয়া পরিসংখ্যান মাথায় রাখবে৷'

ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবিদ সুভদা রাও-এর মতে, '২০১২-১৩ অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্পাদন হার ৪.৭ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে, আমার মতে এই পূর্বাভাষ আবার বাড়ানো হবে৷'

'জাতীয় বৃদ্ধির হার কমতে পারে বলে আশা করা হয়েছিল৷ পরিষেবা ক্ষেত্রে, বিশেষত বাণিজ্য, হোটেল, পরিবহন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে বৃদ্ধি অনুমানের তুলনায় বেশি কমেছে,' বলেন আইএনজি বৈশ্য ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ উপাসনা ভরদ্বাজ৷

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Census 2010

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors