ট্রাইবুনালের রায়ে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে বাংলাদেশে
ঢাকা: একদিকে মুক্তিযুদ্ধের অপরাধীদের বিচার, অন্য দিকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, বাংলাদেশে এখন দু'টোই চলছে সমান তালে৷ বিচারাধীন নেতাদের পাশে এসে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে মৌলবাদী সংগঠন জামাত-ই-ইসলামি-র এককাট্টা অনুরাগী দল৷ তার ওপর গত ক'দিনে বাংলাদেশে সক্রিয় হয়ে উঠেছে আরও একটি সংগঠন, আওয়ামি লিগের সমর্থনে যারা জামাত-ই-ইসলামি-র বিরোধিতায় সরব৷
মুক্তিযুদ্ধের অপরাধীদের বিচার চলছে বাংলাদেশে৷ জামাত-ই-ইসলামি-র ন'জন উচ্চপদস্থ নেতার বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে৷ প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ১৯৭১-র যুদ্ধে হিংসায় ইন্ধন, পরিকল্পিত গণহত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে৷ বিচারের জন্য গঠিত হয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল৷ মঙ্গলবার সেই ট্রাইব্যুনাল বিচারাধীন আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবনের সাজা দেয়৷ প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন জামাত সমর্থকরা৷ অন্য দিকে, যাবজ্জীবন নয়, কাদেরের ফাঁসির দাবিতেও আওয়ামি অনুরাগী গোষ্ঠী অবস্থান বিক্ষোভ, আন্দোলন শুরু করেছে৷ আদালতে যে ছ'দফা চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট উল্লেখ, মুক্তিযুদ্ধের সময় আবদুল কাদেরের নির্দেশেই মিরপুরে অন্তত ৩৪৪ জনকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়৷ এ ছাড়া ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ কাদেরের পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবী জানিয়েছেন, রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হবে৷ তাঁর যুক্তি, কাদেরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা এখনও প্রমাণিত নয়৷
আবদুল কাদের-সহ বিচারাধীন ন'জনই পাক সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিলেন বলে৷ মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উদ্দেশ্য বানচাল করে দেওয়ার ছকও কষেছিলেন৷ ট্রাইব্যুনালে তাঁদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনা হয়েছে৷
গত মাসের ২১ তারিখে আরেক জামাত নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে৷ বর্তমানে আজাদ ফেরার হওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেন্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে অনুমান, পাকিস্তানে আত্মগোপন করেছেন আজাদ৷ তাই আজাদকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অনুরোধও জানিয়েছে ঢাকা৷ বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে মাত্র আট মাসে অন্তত ২৫ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ অনেকের মতে, এই সংখ্যা ৩০ লক্ষ৷ উগ্রপন্থী ও পাক সেনার হাতে সম্মান খুইয়েছিলেন কমপক্ষে আড়াই লক্ষ মহিলা৷
বাংলাদেশি লেখক এবং সাংবাদিক হারুন হাবিব বলেছেন, '১৯৭১-এর যুদ্ধ আক্ষরিক অর্থেই ছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ৷ কত মানুষ যে সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন, তার সঠিক তথ্য নেই৷ এত দিন চেয়েও সুবিচার পাননি তাঁরা৷' ক্ষমতাসীন আওয়ামি দলের মুখপাত্রের বক্তব্য, 'দেরি হয়েছে ঠিক, তবে মানুষ এ বার নিশ্চয়ই বিচার পাবেন৷'
আওয়ামি লিগ ও জামাত-ই-ইসলামি - দু'টি দলের মধ্যে রয়েছে বিস্তর আদর্শগত ফারাক৷ আওয়ামি লিগ-নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান৷ আর জামাত চায় ইসলামিক আদর্শ মেনেই চলুক দেশ৷ হারুনের দাবি, 'আদর্শের এই মৌলিক পার্থক্যই দু'টি সংগঠনকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করেছে৷ সেখান থেকেই জন্ম সাম্প্রতিক প্রশাসন-বিরোধিতার৷'
গত ৪৮ ঘণ্টায় জামাত সমর্থকদের রক্তচক্ষু শাসিয়ে বেড়িয়েছে ঢাকা-সহ প্রায় গোটা দেশকেই৷ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে প্রচার ছাড়াও দফায় দফায় সংগঠিত হয়েছে প্রতিবাদ৷ রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে৷ কয়েকটি জায়গায় জামাত কর্মীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনা ও র্যাব-এর সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গিয়েছে৷ সংবেদনশীল এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
পাল্টা প্রতিবাদে নেমেছেন আওয়ামি লিগের সমর্থকরাও৷ আবদুল কাদেরের ফাঁসির দাবি জানিয়ে ট্রাইব্যুনালের বাইরে অনেক রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ তাঁদের বক্তব্য, 'কাদের যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কোনও সাজাই নয়৷' ফাঁসির দাবিতে বুধবার রাতে ঢাকায় মশাল মিছিলেরও আয়োজন করা হয়৷
জামাত-ই-ইসলামি-র সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'আমাদের সংঘটনকে কোণঠাসা করার এ এক সুপরিকল্পিত চক্রান্ত৷ সরকারই এই ষড়যন্ত্রের রূপকার৷' মুক্তিযুদ্ধের সময় পর্যুদস্ত আওয়ামি লিগ প্রতিশোধ নিতেই 'পুরোনো ক্ষত খুঁচিয়ে ঘা করার চেষ্টা' করছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
মুক্তিযুদ্ধের অপরাধীদের বিচার চলছে বাংলাদেশে৷ জামাত-ই-ইসলামি-র ন'জন উচ্চপদস্থ নেতার বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে৷ প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ১৯৭১-র যুদ্ধে হিংসায় ইন্ধন, পরিকল্পিত গণহত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে৷ বিচারের জন্য গঠিত হয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল৷ মঙ্গলবার সেই ট্রাইব্যুনাল বিচারাধীন আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবনের সাজা দেয়৷ প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন জামাত সমর্থকরা৷ অন্য দিকে, যাবজ্জীবন নয়, কাদেরের ফাঁসির দাবিতেও আওয়ামি অনুরাগী গোষ্ঠী অবস্থান বিক্ষোভ, আন্দোলন শুরু করেছে৷ আদালতে যে ছ'দফা চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট উল্লেখ, মুক্তিযুদ্ধের সময় আবদুল কাদেরের নির্দেশেই মিরপুরে অন্তত ৩৪৪ জনকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়৷ এ ছাড়া ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ কাদেরের পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবী জানিয়েছেন, রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হবে৷ তাঁর যুক্তি, কাদেরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা এখনও প্রমাণিত নয়৷
আবদুল কাদের-সহ বিচারাধীন ন'জনই পাক সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিলেন বলে৷ মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উদ্দেশ্য বানচাল করে দেওয়ার ছকও কষেছিলেন৷ ট্রাইব্যুনালে তাঁদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনা হয়েছে৷
গত মাসের ২১ তারিখে আরেক জামাত নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে৷ বর্তমানে আজাদ ফেরার হওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেন্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে অনুমান, পাকিস্তানে আত্মগোপন করেছেন আজাদ৷ তাই আজাদকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে অনুরোধও জানিয়েছে ঢাকা৷ বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে মাত্র আট মাসে অন্তত ২৫ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ অনেকের মতে, এই সংখ্যা ৩০ লক্ষ৷ উগ্রপন্থী ও পাক সেনার হাতে সম্মান খুইয়েছিলেন কমপক্ষে আড়াই লক্ষ মহিলা৷
বাংলাদেশি লেখক এবং সাংবাদিক হারুন হাবিব বলেছেন, '১৯৭১-এর যুদ্ধ আক্ষরিক অর্থেই ছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ৷ কত মানুষ যে সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন, তার সঠিক তথ্য নেই৷ এত দিন চেয়েও সুবিচার পাননি তাঁরা৷' ক্ষমতাসীন আওয়ামি দলের মুখপাত্রের বক্তব্য, 'দেরি হয়েছে ঠিক, তবে মানুষ এ বার নিশ্চয়ই বিচার পাবেন৷'
আওয়ামি লিগ ও জামাত-ই-ইসলামি - দু'টি দলের মধ্যে রয়েছে বিস্তর আদর্শগত ফারাক৷ আওয়ামি লিগ-নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান৷ আর জামাত চায় ইসলামিক আদর্শ মেনেই চলুক দেশ৷ হারুনের দাবি, 'আদর্শের এই মৌলিক পার্থক্যই দু'টি সংগঠনকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করেছে৷ সেখান থেকেই জন্ম সাম্প্রতিক প্রশাসন-বিরোধিতার৷'
গত ৪৮ ঘণ্টায় জামাত সমর্থকদের রক্তচক্ষু শাসিয়ে বেড়িয়েছে ঢাকা-সহ প্রায় গোটা দেশকেই৷ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে প্রচার ছাড়াও দফায় দফায় সংগঠিত হয়েছে প্রতিবাদ৷ রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে৷ কয়েকটি জায়গায় জামাত কর্মীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনা ও র্যাব-এর সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গিয়েছে৷ সংবেদনশীল এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
পাল্টা প্রতিবাদে নেমেছেন আওয়ামি লিগের সমর্থকরাও৷ আবদুল কাদেরের ফাঁসির দাবি জানিয়ে ট্রাইব্যুনালের বাইরে অনেক রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ তাঁদের বক্তব্য, 'কাদের যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কোনও সাজাই নয়৷' ফাঁসির দাবিতে বুধবার রাতে ঢাকায় মশাল মিছিলেরও আয়োজন করা হয়৷
জামাত-ই-ইসলামি-র সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'আমাদের সংঘটনকে কোণঠাসা করার এ এক সুপরিকল্পিত চক্রান্ত৷ সরকারই এই ষড়যন্ত্রের রূপকার৷' মুক্তিযুদ্ধের সময় পর্যুদস্ত আওয়ামি লিগ প্রতিশোধ নিতেই 'পুরোনো ক্ষত খুঁচিয়ে ঘা করার চেষ্টা' করছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
No comments:
Post a Comment