Monday, July 15, 2013

খনিজে অধিকার জমির মালিকেরই

খনিজে অধিকার জমির মালিকেরই

খনিজে অধিকার জমির মালিকেরই
নয়াদিল্লি: আপনার জমি থেকে যদি কোনও খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে সেই খনিজ পদার্থের উপর মালিকানা থাকবে আপনারই৷ সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে এ কথা স্পষ্ট করেছে৷

বিচারপতি লোধার নেতৃত্বাধীন তিন জনের একটি বেঞ্চ জানিয়েছে, জমির মালিকানা যাঁর হাতে থাকবে তিনিই হবেন জমি থেকে পাওয়া খনিজ পদার্থের মালিকানা৷ এর ফলে এত দিন ধরে চলে আসা নীতিতে বিরাট পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা৷
মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন) অ্যাক্ট, ১৯৫৭ বা এমএমডিআর অনুযায়ী এত দিন পর্যন্ত যদি কোনও খনিজ পদার্থ মিলত, তা জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য সরকারের মালিকানায় চলে যেত৷ জমির মালিকের কোনও মালিকানা থাকত না৷ জমি অধিগ্রহণ আইন, ১৮৯৪ অনুয়াযী সে জমিও সরকার অধিগ্রহণ করে নিত৷ জমির মালিক এককালীন ক্ষতিপূরণ পেতেন৷

এই রেওয়াজের বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরালার কয়েক জন জমি মালিক, যাঁদের জমি থেকে খনিজ পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল৷ স্বাভাবিক ভাবেই সে জমি ও উত্‍পাদিত খনিজ পদার্থ চলে যায় কেরালার সরকারের হাতে৷ জমির আসল মালিকদের দেওয়া হয় ক্ষতিপূরণ৷ এই ঘটনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁরা কেরালা হাইকোর্টে মামলা করেন৷ তবে রায় যায় বিপক্ষে৷ হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, কোনও জমি থেকে খনিজ পদার্থ মিললে তার মালিক সরকার, জমিও জনস্বার্থে সরকার অধিগ্রহণ করবে, সেখানে আর মালিকানা থাকবে না কোনও ব্যক্তির৷

হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কের্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন জমি-মালিকরা৷ তাঁদের দাবি ছিল, তাঁদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি থেকে যদি খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে কেন তাতে তাঁদের কোনও অধিকার থাকবে না৷ কী ভাবে সরকার তাতে মালিকানা পেতে পারে?

এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি লোধার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায় এমএমডিআর-এর ৪ ও ৫ নম্বর ধারায় এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে৷ দু'টি ধারার কোথাওই বলা নেই যে, কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি থেকে খনিজ পাওয়া গেলে তার মালিকানা স্বাভাবিক নিয়মে রাজ্য সরকারের হাতে চলে যাবে এবং খনিজ পদার্থের উপর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনও অধিকার জন্মাবে না৷ কাজেই খনিজ পদার্থের উপর মালিকানা থাকবে জমি মালিকেরই৷ তা যদি সরকারের জমি হয়, সে ক্ষেত্রে সরকারের৷ তা ব্যক্তিগত হলে, মালিকানা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির৷ তবে কোনও কারণে যদি জমির মালিকানা কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে আগেই কেড়ে নেওয়া দয় বা তাঁর মালিকানা চলে যায়, তার পরে যদি সেই জমি থেকে খনিজ বস্ত্তর সন্ধান পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে তা সরকারের৷ এ ছাড়া কোনও ব্যতিক্রম নেই৷

এই বেঞ্চ স্পষ্ট বলে, ওই আইনের ৪ নম্বর ধারায় বলা আছে সরকারের লাইসেন্স ইত্যাদি ছাড়া সেই জমিতে কেউ খননকার্য করতে পারবে না, মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে লাইসেন্স নবীকরণের দায়িত্বও সরকারের, সেটা তারা দিতেও পারে, নাও পারে, তবে স্বাভাবিক নিয়মে মালিকানা জন্মায় না সংশ্লিষ্ট জমি থেকে উত্‍পন্ন খনিজ পদার্থের উপর৷ রাজ্যের ও রাষ্ট্রের অধিকার রয়েছে কর আদায় করার, কিন্ত্ত মালিকানা কায়েম করার নয়৷
তবে জমি যদি সংশ্লিষ্ট মালিকের হাতে থাকে এবং সেখানে লাইসেন্স পাওয়ার পর নিয়মিত খননকার্য চলে, সে ক্ষেত্রে সরকারকে দেও রয়্যালটির পরিমাণ কী হবে তা অবশ্য এই বেঞ্চ নির্ধারণ করেনি৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বৃহত্তর বেঞ্চ৷ - পিটিআই 

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Census 2010

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors